Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

রামায়ণের প্রথম পর্ব

 

 অযোধ্যার রাজা দশরথের রাজত্ব

অযোধ্যা রাজা ছিলেন “রাজা দশরথ “। তিনি অযোধ্যাতে তার তিন স্ত্রী কে নিয়ে তার সংসার ও তার রাজত্ব চালাতেন। রাজা দশরথের তিনটি স্ত্রী ছিলেন। তারা হলেন রানী কৌশল্যা, রানী কৈকেয়ী ও রানী

Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)
Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

সুমিত্রা। রাজা দশরথের তিন স্ত্রী থাকার সত্বেও কোন সন্তান ছিল না। বলাই যায় অযোধ্যার রাজা দশরথ তখনো পর্যন্ত পিতা হতে পারেননি।

 রাজা দশরথের শিকারে যাওয়া Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

একদিন রাজা দশরথ শিকারে গেলেন। রাজা দশরথ ঘন বনের মধ্যে জলের শব্দ পেয়ে সে ভেবেছিলেন কোন হরিণ হয়তো জল খেতে এসেছে, এই ভেবে তিনি জল খাওয়ার লক্ষ্যভেদে তীর ছোরেন। তবে সেখানে হরিণ ছিল না। ছিল সিন্ধু। তিনি অন্ধ মুনির পুত্র। রাজা দশরথের তিরের আঘাতে  অন্ধ মুনির পুত্র সিন্ধুর মৃত্যু ঘটে। রাজা দশরথের তীরের আঘাতের ফলে সিন্দুর মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুর সময় তিনি রাজা দশরথে অভিশাপ দেন, তার জন্য পুত্র শোকে মৃত্যু ঘটে।

 পুত্র সন্তান লাভের জন্য রাজা দশরথের যজ্ঞ Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)
Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

 রাজা দশরথ এই ঘটনা রাজপ্রাস সাথে এসে জানান। ও এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তৎক্ষণাৎ হ্রস্ব সিংগ মুনি রাজা দশরথকে  জানান, এই তো অভিশাপ নয়। এযে অভিশাপ রূপে আশীর্বাদ। হ্রস্ব সিংগ মনি রাজা দশরথকে জানান, পুত্র না থাকায় তাকে পুত্র শোকে মৃত্যুর অভিশাপ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ রাজা দশরথ পিতৃত্ব স্বাদ লাভ করবে। তার বংশে পুত্র সন্তান জন্ম নেবে। এই খবর সোনায় পুরো রাজপ্রাসাদ জুড়ে আনন্দের ঘনঘটা দেখা দিল।

হ্রস্ব সিংগ মুনি রাজা দশরথকে যোগ্যের প্রস্তাব দিলেন। ওই যজ্ঞের ফলে রাজা দশরথ পুত্র সন্তানের পিতা হতে পারবেন একথা জানালেন।  হ্রস্ব সিংগ মুনি রাজপ্রাসাদের যজ্ঞ শুরু করলেন। টানা এক বছর পর্যন্ত চলল এই যজ্ঞ। টানা এক বছর যজ্ঞ করার পর হ্রস্ব সিংগ মনি রাজা দশরথের তিন স্ত্রী দের পুত্র সন্তান লাভের জন্য যজ্ঞের পায়েস খাওয়ানোর প্রস্তাব জানালেন। রাজা দশরথের তিন স্ত্রী কৌশল্যা কৈকেয়ী ও সুমিত্রা কে পায়েস খাওয়ানো হলো।

অযোধ্যার রাজপুত্রদের জন্ম Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

পুত্র সন্তান লাভের জন্য যোগ্য করা ও যজ্ঞের পায়েস খাওয়ানো হলো। সময় মত সে যোগ্য ও পায়েশের প্রভাবে ৩ রানীর গর্ভে চার সন্তান জন্মগ্রহণ করলেন। এ যেন সেই সময় রাজা দশরথের রাজপ্রাসাদে আনন্দের ঘনঘটা নেমে এসেছিল।

 রানী কৌশল্যা একটি পুত্র, রানি কইয়ী একটি পুত্র, ও রানী সুমিত্রা দুটি পুত্র লাভ করেন।

 রানী কৌশল্যার পুত্র ছিলেন শ্রী রাম চন্দ্র। রানী কৈকেয়ী পুত্র ছিলেন শ্রীমান ভরত ও রানী সুমিত্রার পুত্রেরা ছিলেন লক্ষণ ও শত্রুগ্ন। সে সময় চার পুত্র সন্তানকে নিয়ে রাজা দশরথ ও তার তিন স্ত্রী রাজপ্রাসাদে খুবই আনন্দের সাথে তাদের জীবন যাপন করছিলেন। রাজা দশরথের চার পুত্রই ছোটবেলা থেকেই অস্ত্রবিদ্যা শিখতে শুরু করে। এবং খুবই অল্প সময় তারা অস্র বিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ওঠে।

বিশ্বামিত্র মুনির আশ্রমে রাম লক্ষণ এর পদার্পণ 

 বিশ্বামিত্র মুনি তার আশ্রমে তার শিষ্য শিস্যা দের নিয়ে  খুবই শান্তির সাথে তার জীবন যাপন করতেন। হঠাৎ ঐ মুনির আশ্রমে শুরু হলো রাক্ষসের তাণ্ডব। রাক্ষসের অত্যাচারে বিশ্ব মিত্র মুনির যজ্ঞ বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। রাক্ষসেরা যজ্ঞের সময় মুনির আশ্রমে তাদের তাণ্ডব চালাতো। বিশ্বামিত্র মুনি তৎক্ষণাৎ রাজা দশরথের কাছে এলেন, ও তার আশ্রমের সমস্যার কথা জানালেন। মনি বললেন সে রাম ও লক্ষণকে তার সঙ্গে নিয়ে যেতে চান। এই রাক্ষসের তান্ডব থেকে রক্ষা পেতে চান। বিশ্বামিত্র মুনির কথা মত রাজা দশরথের মত ও আদেশ  নিয়ে রাম ও লক্ষণ ওই আশ্রমে গেলেন, ও সেখানে যুদ্ধ করে রাক্ষসদের হারালেন। এবং রাক্ষসের তাণ্ডব থেকে আশ্রম রক্ষা করলেন। Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

রামচন্দ্রের মিথিলায় পদার্পণ ও হরধনু ভঙ্গ 

বিশ্বামিত্র মুনি শ্রী রামচন্দ্র ও লক্ষণকে মিথিলার যজ্ঞে নিয়ে যায়। মিথিলার রাজা ছিলেন “রাজা জনক”। তিনি জনক রাজার নামেই খ্যাত ছিলেন। তিনি ওই যোগ্যে তার মেয়ে সীতার বিবাহের জন্য সুযোগ্য বীর পুত্র খুঁজছিলেন। তবে রাজা জনকের শর্ত ছিল, যজ্ঞের ওখানে রাখা ধনুর্বাণ তুলতে হবে। যে ওই ধনুরবান তুলতে পারবে, সেই বীরের  সাথে তিনি তার কন্যা সীতার বিবাহ দেবেন।  ওই যোগ্যে নানান দেশ থেকে আসা নানা রাজপুত্রের উপস্থিত ছিল। তাকে বিয়ে করার জন্য  শর্ত অনুযায়ী একে একে ওই ধনুর বান তুলতে যাওয়ার চেষ্টা করল। কিন্তু প্রত্যেকে ব্যর্থ হল। তবে সেখানে উপস্থিত রামচন্দ্র শুধুমাত্র বা হাতে সেই ধনুরবান তুলে নিলেন। Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

ও ওই হরধনু ভেঙে দু খন্ড করে দিলেন। সেখানে জনক রাজার চোখে রামচন্দ্র কি বীরপুরুষ বলে মনে হয়। তার মেয়ে সীতার সঙ্গে শ্রী রামচন্দ্রের বিবাহের সিদ্ধান্ত নেয়। ঘটনা শুনে রাজা দশরথ আনন্দে আত্মহারা। রাজা দশরথ তার পুত্রদের সাথে মিথিলার রাজকন্যাদের বিবাহের কথা বলতে মিথিলায় আসেন। সেখানে মিথিলার রাজা “রাজা জনক ” ও রাজা দশরথের বন্ধুত্ব পরায়ন ঘটে।Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

দশরথের পুত্রদের বিয়ে

 শুভ দিন শুভ সময় দেখে অযোধ্যা রাজপুত্রদের সাথে মিথিলার রাজকন্যাদের বিয়ে হয়। দশরথের পুত্র রামের সাথে জনক কণা সীতার বিবাহ ঘটে। একই সাথে লক্ষণের সঙ্গে জনকের উর্মিলার বিবাহ সম্পন্ন করা হয়। এবং ভরত শত্রুঘ্নের সঙ্গে জনক রাজার ভাইয়ের কন্যা পান্ডবী ও শত্রুকৃতি সঙ্গে বিবাহ সম্পন্ন হয়। Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

পরশুরামের অহংকার ভগ্ন

 মিথিলা থেকে বিয়ে করে ফেরার পথে মধ্য রাস্তায় রামচন্দ্রের পর আটকে দেয় শিব ভক্ত পরশুরাম। পরশুরাম তার অহংকার দেখিয়ে রাম কে বলেন সে যদি পরশুরামের ধনুক ভাঙতে পারে তবে সে রামকে বীর বলে মনে করবে। তৎক্ষণাথ রাম পরশুরামের কথা রাখার জন্য পরশুরামের ধনুক ভঙ্গ করে। ও তার সাথে পরশুরামের অহংকার ভঙ্গ করে।

রামচন্দ্র রাজ্যভিষেক

পরবর্তী ক্ষেত্রে রাজা দশরা সিদ্ধান্ত নেন শ্রী রামচন্দ্র কে তিনি অযোধ্যার রাজা বানাবেন। শুরু হতে থাকে নিয়ম কানুন। শুরু হয় শ্রীরামচন্দ্রের রাজ্যভিষেক। এ খবর যেন পুরো রাজমহলে ছড়িয়ে পড়ে। সবাই আনন্দের সাথে সেই রাজ্য অভিষেকে আশার আনন্দ পেতে থাকে। রামচন্দ্রের রাজ্য অভিষেকের কথা শুনে কুচি মন্থরার হিংসে হতে থাকে। এবং নিজেকে কৈকিয়ীর কাছে ভালো প্রমাণ করার জন্য রামচন্দ্রের রাজ্য অভিষেকের সংবাদ কৈকেয়ীর কাছে পৌঁছে দেয়। সে খবর শুনে রানী কৈকেয়ী খুবই আনন্দ পায়, ও আনন্দের উপহার হিসেবে কুচি মান্থরাকে তার গলার হার উপহার দেয়।

হার দেখে মন্থরা কৈকেয়ীকে জানায়, শ্রী রামচন্দ্র রাজা হলে তো ভরত রাজা হতে পারবেনা। রামচন্দ্র রাজা হয়ে গেলে ভরত ও কৈকেয়ীর অসুবিধা। কুচি মান্থরা কৈকেয়ীকে কু পরামর্শ দিতে থাকে। আর জানায় রাম রাজা হলে তো ভরতের অসুবিধে। তার থেকে যদি ভরত রাজা হয়, তাহলে সেটা কৈকেয়ীর জন্য খুবই আনন্দের সংবাদ। মন্থরা কৈকেয়ীকে  পরামর্শ দেয় সে যেন রাজা দশরথের কাছে গিয়ে দুটি বর চায়। আর প্রথম বর হিসেবে রাজা দশরথ যেন ভরত কে অযোধ্যার রাজা করেন ও রাম কে বনবাসে পাঠান। এতে ভারতের রাজা হওয়া ও বিনা অপরাধের রামচন্দ্রকে শাস্তি দেওয়া যাবে।

কুচি মান্থরার কু পরামর্শ মত রানী কৈকেয়ী রাজা দশরথের কাছে এই দুটি বর চান। তবে রাজা তার বর যাওয়ার হতবাক হন। ও রাজা যে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে এ কথা জানান। ঘটনা রামচন্দ্র জানতে পেরে তার কৈকেয়ী মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে সে ভরত কে রাজা করতে চান। ও নিজে ১৪ বছরের জন্য বনবাসে যেতে রাজি হন। এ কথায় রাজা দশরথের মত ছিল না। কিন্তু রামচন্দ্র তার মায়ের ইচ্ছে পূরণের জন্য তার বাবা দশরথ কে সামলান। ও বনবাসে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। Ramayan Story Pert-1 (রামায়ণের প্রথম পর্ব)

Prokash Durlov

আমার নাম প্রকাশ করলাম আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগার | ব্লগিং করি এবং ব্লগিং থেকে যেটুকু অর্থ উপার্জন করি সেটুকু আমার সংসারের কাজকর | আমি ২০১৩ সাল থেকে ব্লগিং করছি ব্লগিং ক্যারিয়ারে অনেক ওঠানামা হয়েছে তবুও আমি ব্লক থেকে ছাড়িনি আজও পর্যন্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমস্ত ধরনের ইনফরমেশন দর্শকের সামনে তুলে ধরছি |

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

GP Global